Description
কাশ্মীর মানে জন্নত। সেই জন্নতের আড়ালেই রয়েছে জাহান্নম। হাড় হিম করা সন্ত্রাস বুকে জেগে থাকা এক মৃত্যু উপত্যকা। ‘হাফ উইডো’, ‘হাফ মাদার’, ‘হাফ অরফ্যান’— এই শব্দগুলো অভিধানে খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু কাশ্মীর উপত্যকার মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে এই শব্দগুলো। গত তিন দশকের সন্ত্রাসে দীর্ণ কাশ্মীর। ‘জন্নত’ আর ‘জাহান্নম’-এর সীমারেখা মুছে গিয়েছে। জেহাদে বুঁদ প্রজন্মের পর প্রজন্ম। উপত্যকায় ‘জেহাদ’ আদতে ‘ধান্দা’। তরুণ প্রজন্ম দাবার ঘুঁটি। রাজনীতির সূক্ষ্ম চাল। ধর্মের কারবারি। হাওয়ালার মাধ্যমে টাকার লেনদেন। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মদতে চলতে থাকে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। ইসলামের পাঠ দেওয়ার নামে চলে মগজধোলাই। ফৌজের ওপর ফিদায়েঁ হামলা। ফৌজিদের ত্যাগ, যন্ত্রণা, হতাশা। ‘মেডেল’-এ জমে ওঠে ধুলো। শহিদদের পরিবারগুলো স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে থাকে।
সকালে আজাদির স্বপ্ন দেখা কাশ্মীরি যুবক সন্ধ্যায় ঘুমিয়ে থাকে কবরে। ঝরে যায় অনুচ্চারিত প্রেম। স্বপ্ন ভাঙার যন্ত্রণা। বেকারত্বের জ্বালা। মাদকের রমরমা। নাড়াবাজি, জুলুস, পাত্থরবাজি। পেলেট গানের ক্ষত। ধরপাকড়, নাকাবন্দি, খানাতল্লাশি, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। মানুষের মৃত্যু উপত্যকায় রক্তাক্ত রুটিন এখন স্রেফ ঘটনা মাত্র। মৃতেরা নিছক পরিসংখ্যান। কাশ্মীরকে চুম্বকের মতো ব্যবহার করে ভোটের ময়দানে চলে উগ্র জাতীয়তাবাদের সার্কাস। সন্ত্রাস রুখতে পালটা সন্ত্রাসের নীতি কি অপরিহার্য? ‘পিএসএ’ ও ‘আফস্পা’র রক্ষাকবচকে ব্যবহার করে চলতে থাকে বাহিনীর দাপট। শান্তি ফেরাতে কাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ? এক দিকে জঙ্গিদের হুমকি, অন্য দিকে ফৌজের চোখরাঙানি। এর মাঝে পড়ে কেমন আছেন কাশ্মীরের আমজনতা? রূঢ় বাস্তবের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় এই কাহিনি।
জন্নতের মাটি খুঁড়ে তুলে আনা এক মর্মস্পর্শী আখ্যান ‘সর্জমীন’।
Reviews
There are no reviews yet.