Description
ফেক নিউজ’ গত কয়েক বছরের অন্তরালে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে সরল আর যুক্তিহীন মনে হয় যে খবরগুলোকে, সেগুলোই যে একটু একটু করে আমাদের সমাজের ভিত নড়বড়ে করে দিচ্ছে সে সম্পর্কে আমাদের অনেকেই অবগত নন।
প্রযুক্তি ও মানুষের জন্মগত সংস্কারকে হাতিয়ার করে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই যে গরল-বীজ রোপণ শুরু হয়েছিল, তা আজ বিষবৃক্ষে পরিণত হয়ে মনুষ্যসমাজের প্রতিটি স্নায়ুকে আচ্ছন্ন করতে শুরু করেছে।
কর্পোরেটদের সঙ্গে চুক্তি করে চালানো সার্ভেলেন্স ক্যাপিটালিজম-এর এই বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক যে কীভাবে আমাদের মগজধোলাই করছে, তা বিশদে জানতে পারলে আতঙ্কে গায়ের রক্ত হিম হয়ে যায়।
রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডার উদ্দেশ্য বিকল্প সত্যের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। এই কাজ একদিনে কিন্তু সম্পন্ন হয়নি। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা হোক অথবা স্নোডেন লিক, পানামা পেপার্স হোক অথবা তুরস্কের মিলিটারি ক্যুপ-এর ব্যর্থতা, এমনকি গত ৬ জানুয়ারি ২০২১-এ ট্রাম্পের মিথ্যাচারে ভরসা করে এক দঙ্গল লোক ওয়াশিংটনে কংগ্রেসের বিল্ডিংয়ে চড়াও হওয়া — আপাত দৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে হলেও, এই প্রত্যেকটি ঘটনা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।
‘আইটি সেল’ আর ‘পেইড মিডিয়া’-এর যোগসাজশে চালিয়ে যাওয়া ধর্মীয় মেরুকরণ আর ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’-এর এই পদ্ধতি নির্বাচন হ্যাক করে আর মানুষকে ‘ডিসইনফর্মেশন’ দিয়েই থামেনি, এই আগুনের আঁচ এসে লাগছে প্রতিনিয়ত আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও।
নিতান্ত সাধারণ কিছু মতবিরোধের ফলে পুরোনো স্কুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক যেমন ভেঙে যেতে পারে চিরকালের মতো, কিংবা আত্মীয়দের মধ্যে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, ফেসবুকে ব্লক হয়ে যেতে পারে পছন্দের আপন ব্যক্তিজনরা, সেই অভিজ্ঞতা হয়নি এমন মানুষ খুব কমই আছেন।
গত পনেরো বছরের রাজনৈতিক ঘটনাক্রম আর ফেক নিউজের ধারাবাহিক বিবর্তনের কথা তুলে ধরার এই কাহিনি ততটাই বাস্তব, যতটা আমাদের জীবন।
এই গল্প সেই রুঢ় বাস্তবের, যেখানে সত্যি ও মিথ্যের যুদ্ধে ‘সত্যি’ হেরে যায় প্রতিনিয়ত। জয়ী হয় ‘মিথ্যে’। যেমন সে বরাবর জিতে এসেছে, জিতছে এবং ভবিষ্যতেও হয়তো জিতবে। ‘সত্যমেব জয়তে’-এর স্তোকবাক্য বইয়ের পাতায় ধুলো খাবে ঠিকই, কিন্তু আমাদের অলক্ষেই হয়তো বা দুনিয়ার নতুন স্লোগান বাস্তবায়িত হবে ক্ষমতা দখলের যুদ্ধে—- মিথ্যের জয়!
“মিথ্যামেব জয়তে”
Reviews
There are no reviews yet.